ইলিউশন by অঙ্কিত ঘোষ
বৈভবীর কথা
ফার্স্ট গার্ল, জীবনে কোনোদিনও সেকেন্ড না হওয়া মেয়ে বলতে গেলেই চোখের সামনে যেই মেয়ে ভাসে সে হচ্ছে বৈভবী... এক বিশাল জয়েন্ট ফ্যামিলির এক মাত্র মেয়ে, তো বোঝাই যাচ্ছে একমাত্র আদরের....কিন্তু এইসব আদরের মেয়েদের চাপ বেশি থাকে তার উপর আবার topper...
মুখ দেখলেই বোঝা যায় একদম ভদ্র...অবশ্যই যার title ভদ্র তার কি আর ভদ্র হওয়ার সার্টেফিকেট লাগবে?
"তুই প্রেম করিসনা কেন?" কলেজের টিফিনে বৈভবিকে জিজ্ঞেস করে অনন্যা...
"মা বলে ভদ্র বাড়ির মেয়েরা প্রেম করেনা"
এমনিতেই অনন্যা বৈভবীর বেস্ট friend কিন্তু ওই মেয়েদের বেস্ট friend কিনা, বৈভবী অনন্যা কে দেখতে পারেনা..কারণ ওই একটাই..অনন্যার ক্লাস 8 থেকে প্রেম, একটা ভাঙে তো একটা গড়ে...
অন্যন্যাকে জিজ্ঞেস করলে বলে এটা নাকি natural, কোন ডক্টর জাহাঙ্গীর খানের কুর্সি তে বসার theory দেয়...
আবার সেই জাহাঙ্গীর খান বেশি শাহরুখ খানই যে আবার বলেছে pyar এক hi বার hota hain...
না বাবা...বৈভবী এইসবের মধ্যে নেই...ভদ্র বাড়ির মেয়েরা প্রেম করেনা,
পাড়ার দিদি অনুষাকে নিয়ে লোকজন কত কথা বলে,
নাহ, সে এইসব শুনতে পারবেনা,
তার সব বন্ধুরা প্রেম করুক যাই করুক, তাকে বাবা মা যার সাথে দিবে তার কাছেই যাবে...বদনাম তো হবেনা
রাজীবের কথা ১
বড়লোক বাপের ছেলে তবে বখে যাওয়া নয়...পড়াশোনায় বেশ ভালো...জীবনে যাই ভাবে তাই করে...
তাই হয়তো সেদিন জুনিয়র বৈভবীকে ragging করতে গিয়ে ডিরেক্ট প্রপোজ করে বসে..সবাই তো হতবাক...
কিন্তু আজব ব্যাপার...মেয়েটা হতবাক হয়নি...শান্তভাবে চোখ বড় করে উত্তর দিয়েছিল..."মা বলে ভদ্র বাড়ির মেয়েরা প্রেম করেনা"
ব্যাস...ঘায়েল...আগে যাও বা পড়েছিল..এবারে পুরো পাহাড় থেকে মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেল...
কিন্তু মেয়েটা কিছুতেই ভাও দেবেনা... ইভেন তাকায়না...
রাজীব একদিন follow করেছিল..
সত্যিই মেয়েটা ভদ্র...বাড়ি টু কলেজ, কলেজ টু বাড়ি..
অগত্যা...
ভগবান বলেছেন যখন মেয়ে ভাও দেবেনা, তখন মেয়ের বেস্ট friend কে দিয়ে ভাও খাওয়ানো উচিত...
কিন্তু এই অনন্যা আসতে এত দেরি করছে কেন....
অনন্যার কথা
অনন্যা সত্যিই অনন্যা...এরকম ছেলে ঘোরানো ক্ষমতা সব মেয়ের থাকেনা...সকালে যেই ছেলেকে নিয়ে ঘুরবে বিকেল বেলায় তার বাপ কে নিয়েও ঘুরতে পারে...স্বভাবতই বেশ ক্ষমতাবান দশভুজা মেয়ে। দামি রেস্টুরেন্টে খাওয়ালেই মেয়ে তোমার, তবে পুরোপুরি না, ধরতে গেলেই পাকাল মাছের মতন পিছলে বেরিয়ে আসবে।
"হবেনা গো... ও খুব জেদী তার উপর আবার ভয়ানক ভদ্র "
"কিন্তু আমি যে ওকে সত্যি ভালোবাসি রে" বললো রাজীব
"তোমাকে একটা কথা বলি, কাউকে বলনা..তোমার ব্যাচের অভিষেকদাও ভাবে আমি ওকে ভালোবাসি আবার নবজিত দাও ভাবে আমি ওকে ভালোবাসি..এদিকে আমি যে দুজনকে নিয়ে ফুটবল খেলছি তা কেউ জানেনা"
"কি??? ওরা তো বেস্ট ফ্রেন্ড...পারলি কি করে?"
"কি করে আবার, নবজিৎকে বলেছি অভিষেককে বলতে না, আমার দিকে বাজে ভাবে তাকায় আর অভিষেককে বলেছি নবজিৎকে বলতেনা, কারণ ও আমাকে সহ্য করতে পারেনা.. ব্যাস খেল খতম..যতদিন ওই তন্দুর পার্ক, নিকো পার্ক, একোয়াটিকা আছে আমি আছি, যেদিন কফি হাউসে নেমে আসবে সেদিন আমিও টফি হয়ে উড়ে পালাবো"
"কি সাংঘাতিক মেয়ে রে তুই.."
"হ্যা, নারী চরিত্র বেজায় জটিল...তবে তোমার রাধিকাটি সরল"
"তাইতো প্রেমে পড়েছি, আমার নামে একটু ভালো ভালো বলে দে"
"কিন্তু বিনিময়ে আমি কি পাবো?"
-"পার্ক স্ট্রিটের যেকোনো রেস্টুরেন্ট"
-"done..."
রাজীব-বৈভবীর কথা ১
কথায় আছে "agar kisi cheez ko...."বাকিটা বলার আর দরকার নেই...তাই হয়েছে...বৈভবী অনেক ঝোলানোর পর প্রায় এক বছর পরে রাজীবকে হ্যা বললো... (কেউ কেউ বিতর্ক করার আগে বলে নেই নারী কে আমি cheez বলিনি, cheez bari hain mast mast গানের লিরিসিস্ট বলেছেন)
একদিন হয়েছে প্রেমের, কলেজের পিছনের দীঘির পারে দুজন বসে
বৈভবীর হাত ধরতে গেল রাজীব...
কিন্তু বৈভবীর হাত সরিয়ে নেওয়াতে অবাক হল রাজীব
"তুমি আমাকে বিয়ে করবে তো??" জিজ্ঞেস করলো বৈভবী
"হ্যারে পাগলী, লোকে তো প্রেম করে বিয়ে করার জন্য"
-"সত্যি তো"
-"হ্যারে তিন সত্যি, তোর মতন এমন ঘরোয়া মেয়ে আর কোথায় পাবো?"
রাজীবের কথা
এক বছর হয়ে গেছে তাদের সম্পর্কের... সব ভালোই আছে, কিন্তু প্রতিদিন বৈভবী একবার করে জিজ্ঞেস করবেই "তুমি আমাকে বিয়ে করবে তো?"
বিরক্ত হয়ে গেছে রাজীব, একে ফাইনাল ইয়ারে ক্যাম্পাসিং এর চাপ তার উপর প্রতিদিন বৈভবীর জেরা...
আগে রাজীব সেই উত্তর দিত যা প্রথমদিন দিয়েছিল, তারপর থেকে আর "হুম" ছাড়া কোনো কথা বলে না..
একটা হুম এই যদি কাজ হয় বেকার রোমান্টিসিজম মাড়িয়ে কি লাভ
আর বৈভবীর জেরা
এই তো সেদিন, সায়নী রাজীবের খোঁজ করছিল
"এই বৈভবী রাজীবকে দেখেছিস?"
বৈভবী বলে বসে কেন
"রাজীব কে আমি খুঁজে পাচ্ছিনা, ওকে বলিস তো রাতে যেন আমাকে call করে, প্রজেক্ট নিয়ে কথা আছে, আমার ব্যালান্স নেই আর ও তো whatsapp ও করেনা"
সেদিন আচ্ছা বলেই বৈভবী ফোন লাগালো রাজীবকে
"সায়নীদির সাথে তোমার কি সম্পর্ক...বল"
বেচারা ঘুমাচ্ছিল, জ্বর..
"নাহ বল, আমাকে লুকিয়ে তুমি ওকে রাতে ফোন করবে??আবার প্রজেক্টের বাহানা দেওয়া"
এতো বিনা মেঘেই বজ্রপাত..
"কি হয়েছে" ঘুম জড়ানো গলায় জিজ্ঞেস করলো রাজীব
বৈভবী পুরো ঘটনা বললো আর তারপর বলল "পুরো কথা call রেকর্ড করে রাখবে, আমি শুনবো"
আচ্ছা ফেসাদ
তারপর থেকে যেই মেয়েই ফোন করুক, পুরো call হিস্টোরি থেকে কল রেকর্ড শুনতো বৈভবী
দমবন্ধ লাগতো রাজীবের...একবার বলে দিয়েছিল যে সে এইভাবে আর চলতে পারবেনা
তখনই বৈভবী কেঁদে কেটে বলে ওঠে "তুমি আমার সাথে ছেলে খেলা করলে, প্রেম করে বলছো বিয়ে করবেনা, আমার মুখে কেন এইভাবে কালি লাগলে??? কি দোষ আমার?? একটু খানি স্বামীর মোবাইলটাও দেখতে পারবোনা?? জানবোনা সে কার কার সাথে মেশে?? তুমি আমার সামনে মরা ছাড়া আর কোনো রাস্তা রাখলে না"
রাজীব ভয় পেয়ে যায়, আবার সব মানিয়ে সব ঠিক করে নেয়...
কাউকে কিচ্ছু বলতেও পারেনা,কি কুক্ষণে যে অনন্যাকে বলতে গেছিল...
বাইরে হাসি হাসি মুখ করে থাকতে হয়..মুখ একটু ভার দেখলেই কেউ না কেউ বৈভবিকে গিয়ে খবর দিয়ে দেয়..আর ব্যাস...হয়ে গেল
"তুমি আমার সাথে ভালো নেই, আমি বেঁচে থেকে কি করবো তুমি ভালো না থাকলে"
শুরু হয়ে যায় গঙ্গা নদী
আর সাথে এক প্রশ্ন
"তুমি আমাকে বিয়ে করবে তো??"
এদিকে ছেলে মদ খেতে পারেনা, তিতা লাগে..
এক ভয়ানক আপদ এসে জুটেছে তার
এই রকমই চলছিল, কিন্তু হঠাৎ করে ক্যাম্পাসিং তার জীবন বদলে দিলো...
শান্তি
কলেজ ছাড়ার দুই মাস পরের ঘটনা, রাজীব joining পেয়ে দেহরাদুন চলে গেছে...বেচারা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল দেরাদুনে গিয়ে সব শেষ করবে, এমনিতেই কোম্পানিতে বৈভবীর চেনা জানা কেউ নেই।
ইন্টারভিউতে জিজ্ঞেস করেছিল যে তার লোকেশন প্রেফারেন্স কি, উত্তরে সে জোর দিয়ে বলেছিল outside কলকাতা.. HR অবাক হয়ে তাকিয়ে কারণ জিজ্ঞেস করাতে সে বলেছিল "আমার কোনো টান নেই"
টান তার ছিলই, কলকাতার প্রতি, বাড়ির প্রতি, কিন্তু টান আর শান্তির মধ্যে কোনো একটা choose করতে বললে লোকজন শান্তিকেই চাইবে
Confirmation mail যেদিন পায় সেদিন বৈভবী কান্নায় ভেঙে পড়েছিল
"তুমি আমার থেকে দূরে চলে যাবে?? তুমি নিশ্চই বলোনি যে তুমি কলকাতায় চাও"
আর রাজীব উত্তরে মিথ্যে বলেছিল "আমি বলেছিলাম কলকাতা ছাড়া যাবোনা, জোর দিয়েই বলেছিলাম, এটাও বলেছিলাম কলকাতার বাইরে চাকরি দিলে আমি যাবোনা, কিন্তু কি করবো বলো...একে এই মন্দের বাজারে চাকরী, মা আর কতদিন আমাকে একা টানবে, তার উপর ভাড়াবাড়ি, তুমিই বল কি করবো?"
আর পারছিলনা টানতে, বৈভবী বলেছিল "যাও, যেখানে খুশি যাও, আমাকে বিয়ে করবে তো?"
-"হ্যা আমি করবো"
-"যতই দূরে যাও, মনে রেখো তোমার মধ্যেই আমি আছি"
রাজীব আগে থেকেই মাকে বলেছিল তারসাথে দেরদুন শিফট করতে, তারউপর মায়নাটাও ভালো...মা আর দুবার ভাবেনি...সব নিয়ে তারা দেরদুন শিফট করে যায়...
আর ফ্লাইটে উঠে রাজীব একটা কাজ করেছিল...নিজের সিমটা এয়ারপোর্টের বাথরুমে ভেঙে ফেলে দিয়েছিল...
প্রথম প্রথম তারমধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করতো, কিন্তু আর পারছিল না...এইভাবে চুপচাপ সরে পড়াই ভালো...বৈভবী তো আর বাচ্চনা... ঠিক বুঝে যাবে তাকে রাজীব ধোকা দিয়েছে, কি আর করবে, বাস্তবে রাজীবকে দোষী মনে হলেও কিন্তু সে যে এতদিন যা সহ্য করেছে তাও নির্মম।
পাঁচ বছর পর
লম্বা সময়...রাজীবের মা এর মধ্যে গত হয়েছেন দুই বছর হল...বুড়ির খালি একটাই দুঃখ শেষদিনে বৌমার মুখ দেখে যেতে পারলেননা,কিন্তু মরার আগে তার ছেলেকে জেলে ঢোকানোর ভার দিয়ে গেছেন ছেলের অফিসের বস অভিরুপ বাবুর উপর...
মানুষটা বাঙালি নিঃসন্তান, তাই রাজীবকে অনেকটা নিজের ছেলের মতন দেখেন...
একদিন রাজীবকে ডেকে পাঠালেন...রাজীব চেম্বারে ঢুকতেই বললেন
"আজ সন্ধ্যা ছটায় তোমার ডেট আছে"
-মানে, আমি তো কিছু...
-তুমি হয়তো ভুলে গেছো, তোমার মা তোমার বিয়ের দায়িত্ব আমার হাতে দিয়ে গেছেন, মোটামুটি গত সাতদিন ধরে matrimoni তে খোঁজার পর এনাক্ষীকে পেয়েছি....বয়স 23, তোমার মতনই বাবা মা কেউ নেই, পিসির কাছে মানুষ, এখানেই phd করছে
-কিন্তু স্যার আজ ক্লায়েন্ট...
-ওসব আমি সামলে নেব..তুমি আজ যাও, পরিচয় করো, দুজন দুজনকে চেনো, আর ওই তোমাদের ভাষায় wavelength ম্যাচ না করলে আবার খোঁজা যাবে, ডিটেইলস তোমাকে whatsapp করে দিয়েছি।
রাজীব বাধ্য ছেলের মতন বেরিয়ে গেল..
সন্ধ্যে 8টা 24..ccd
"PhD করা মেয়েরা এত সুন্দর হয়?" হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করলো রাজীব..
ভালোই wavelength ম্যাচ হয়েছে, মেয়েটা বেশ ভালো, বেশি গায়ে পড়া না, তারউপর আমার বরের আছে বলে আমি বরের টাকায় নাচবো এইরকম মেয়েও নয়...এক কথায় বেশ আত্মমর্যাদা সম্পন্ন শিক্ষিত মেয়ে
"হ্যা হয়, কেন হবেনা, সবাই সুন্দর..আচ্ছা আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই, যেহেতু আমরা বিয়ের জন্যই meet করেছি আমি আগে থেকেই clear করে দিতে চাই আমি কিন্তু বিয়ের পর চাকরি করবো" বলল এনাক্ষী
-"হ্যা অবশ্যই, কেন নয়..এতে আমার উপর চাপ কমবে"
-"যাক...তাহলে.."
-"কি তাহলে...."
-"উমমমম...তোমার আমাকে কেমন লাগলো?"
-"সেটা আসল নয়,আগে বল তোমার আমাকে কেমন লাগলো?"
-"আমাকেই আগে বলতে হবে লেডিস ফার্স্ট বলে" হাসতে হাসতে বলল এনাক্ষী
-"হ্যা অবশ্যই লেডিস ফার্স্ট"
-"তাহলে বলি...তোমায় দেখে কথা বলে যা বুঝলাম, তুমি বেশ পরিশ্রমী, মিশুকে..এগুলো তোমার প্লাস পয়েন্ট, তারউপর শ্বশুর বাড়িতে কেউ নেই, আমার উপর খবরদারি করার কেউ নেই সেটাও প্লাস পয়েন্ট"বলে হাসতে লাগলো এনাক্ষী
রাজীবও হাসছিল..হঠাৎ করে তার কানের পাশে কে যেন ফিসফিসিয়ে উঠলো.."আর খেতে খুব ভালোবাসো"
বিষম খেল রাজীব.."তুমি কিছু বললে" জিজ্ঞেস করলো এনাক্ষীকে
"না তো, তোমার কান বাজছে নাকি?" জিজ্ঞেস করলো এনাক্ষী
রাজীবের হঠাৎ করে মনে হল গলাটা বৈভবীর মতন..
থাক, তার কান বাজছে
"আজ অনেক রাত হয়ে গেল,চলো ওঠা যাক, তা বলে দেই আমার থেকে হ্যা" অবলীলায় বলে দিল এনাক্ষী
"এত তাড়াতাড়ি??" জিজ্ঞেস করলো রাজীব
"হ্যা, আমার মনে যা ছিল তা আমি বলে দিলাম, এবার বাকি ঠেলা তুমি সামলাও"
বলে বাসে উঠে পড়লো এনাক্ষী...
যাবার সময় বাস থেকে টাটা...
রাজীব হাটতে লাগলো...তারমনে হচ্ছে, কেউ আসছে তার জীবনে...অনেকটা প্রথম প্রেমে পড়ার মুহূর্ত
"তোমাকে বলেছিলাম তুমি আমাকে ভুলে যাবে" আবার কানের পাশে সেই ফিসফিসানি
পিছনে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই..
আবার সে হাটতে লাগলো... কি হয়েছে তার
ঘরে ঢুকে স্যারকে ফোন করে হ্যা বলে দিল,
স্যার মহা খুশি সব শুনে, বললেন পরের বৃহস্পতিবারই যাবেন এনাক্ষীদের বাড়ি পাকা কথা বলতে
ফোন রাখার সাথে সাথে আবার কানের পাশে সেই আওয়াজ
"তুমি কি ওকে সত্যিই বিয়ে করবে??আমাকে যে বলেছিলে তুমি আমাকে বিয়ে করবে"
এবার রাজীবের মেরুদন্ড দিয়ে শীতল হওয়া নেমে গেল...
এযে বৈভবীর গলা... তার এবারে ভয় করতে শুরু করলো,
ভুত নাকি এটা তার মনের ভুল???
"তোমাকে বলেছিলাম না আমি তোমার মধ্যেই আছি" আবার সেই আওয়াজ
"বন্ধ করো, বন্ধ করো এইসব...আমি শান্তিতে থাকতে চাই" আর্তনাদ করে উঠলো রাজীব...
"শান্তি তো তুমি আমার কাছে পেতে...বল আমাকে বিয়ে করবে???"
আর থাকতে পারলোনা রাজীব...ঘর থেকে এক ছুটে বেরিয়ে গেল...রাস্তা দিয়ে সে দৌড়াচ্ছে
আর কানের কাছে ক্রমাগত সেই এক কথা "আমাকে বিয়ে করবে তো??"
অগ্নিভর কথা...
আজ তার চাকরিতে প্রথমদিন, গতমাসেই সে ডক্টর হয়ে বেরিয়েছে সাইকোলজি নিয়ে...
মানুষের মনের অন্ধকার জিনিসগুলো নিয়ে যারা কাজ করে...এহেন ডাক্তারের কাজ পড়েছে শিমুলতলা পাগলাগারোডে...
সবার সাথে পরিচয়ের পর অফিসার সব পাগলদের ডিটেইলস দেখাতে দেখাতে বললো
"চলুন আপনাকে সবার আগে একটা ইন্টারেস্টিং কেস দেখাই... বিয়ে পাগল পাগলা কখনো দেখেছেন, আমাদের এখানে আছে...চলুন"
একটা ছোট্ট খুপরী, সেখানে ছোট্ট জানলা দিয়ে অগ্নিভ দেখল একটা মানুষ কান দুটো চেপে ধরে একনাগাড়ে বলে যাচ্ছে "আমি তোমাকে বিয়ে করবো,আমি তোমাকে বিয়ে করবো,আমি তোমাকে বিয়ে করবো..."
"পাত্রের নাম রাজীব সান্যাল, বড় কোম্পানিতে চাকরী করতেন, engineer... বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে ওই কি যেন বলে ডেট করতে গেছিলেন... তারপর বাড়ি ফিরে অফিসারকে ফোন করে পাত্রীর হ্যা করার খবর দেন, পরের দিন সকালে তাকে পাওয়া যায় ড্রেনে পরে আছেন, পোশাকহীন, আর সেইদিন থেকে আজ পর্যন্ত একনাগাড়ে এই প্রলাপ বকে যাচ্ছেন...এরকম বিয়ে পাগলা কোথাও পাবেননা..চলুন পরের ঘরে..."
অগ্নিভ যেতে যেতে শুনলো লোকটা একনাগাড়ে বলেই যাচ্ছে
"আমি তোমাকে বিয়ে করবো,আমি তোমাকে বিয়ে করবো....."
পুনশ্চ: ছয়মাস রাজীবের কোনো খোঁজ না পেয়ে বৈভবী সুইসাইড করেছিল....
0 comments:
Post a Comment